হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার সকাল ৯.০০ ঘটিকায়, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ইসফান্দিয়ার জাহাদ হাসান মিলনায়তনে, “তারুণ্যের আলোয় কাটবে আধার, প্রতিষ্ঠা পাবে সবার মানবাধিকার” স্লোগানকে সামনে রেখে ৯ম মানবাধিকার সম্মেলন আয়োজন করে। ব্যারিস্টার শাহজাদা আল আমীন কবির এর সভাপতিত্বে কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশে এখন মানবাধিকার নেই, দানবাধিকার আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে আমাদের সংবিধানে কালো আইন জারির বিধান ছিলো। এর পর থেকে আমাদের আর কালো আইনের বিধান ছিলো না। কিন্তু কিছুদিন আগে যারাই কালো আইনের বিরোধিতা করছিলো তারাই স্বাধীনতার কিছু মাস পরে সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী করে আর্টিকেল ২৬ এবং আর্টিকেল ৩৩ এর মাধ্যমে সংবিধানে কালো আইন জারির বিধান করেন। তিনি আরো বলেন, সংবিধানকে তছনছ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিরোধীদের দমনে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, অস্ত্র আইন, বিস্ফোরক আইন, নাশকতা আইনে মামলা দিয়ে দমন করছে তারা। যে পুলিশ জনসভায় গিয়ে নৌকার ভোট চায়, সে পুলিশই তদন্ত করছে আপনি অপরাধ করছেন কি করেন নাই। কিন্তু এইসব কালো আইনের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছি না।

 

 

 

 

 

 

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সায়ীদ খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রত্যেকটি সরকারের একটি নিজস্ব বয়ান আছে। সেই বয়ানের বিপক্ষে গেলে তার কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয়। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস বের করার জন্য গবেষণা করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন মানবাধিকার এর ক্ষেত্রে বাধা হচ্ছে আমাদের রক্ষণশীল সমাজ। ধর্মীয় গোড়ামী, কুসংস্কার, এবং সর্বপোরী রাষ্ট্রযন্ত্র, অর্থাৎ পুলিশ, বড় বড় বাহিনী অথবা আমলা, যারা নিজেকে রাষ্ট্র মনে করে। তাই দেখা যায়, ওসি, এম পি বা এরকম কারো সমালোচনা করলে জেলে যেতে হয়। এখানে রাষ্ট্র, দল সবকিছু একাকার হয়ে গেছে।

এছাড়াও মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, আজকে আমি আমার ভোটটি ঠিক মতো দিতে পারবো কিনা, দিলে সেটি সঠিক ভাবে গণনা হবে কিনা, হলেও আমার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে কিনা সেটি বড় সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন আমরা শুধু এই আওয়ামী লীগ সরকার বলে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছি এমন না। অতীতে বলেছি, ভবিষ্যতেও বলবো। সেটি যে সরকারিই ক্ষমতায় থাকুক না কেন। তিনি আরো বলেন, দেশের গণতন্ত্র, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় তরুণ সমাজকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।


সবশেষে উপস্থিত মানবাধিকার কর্মীগণকে মানবাধিকার রক্ষায় শপথ বাক্য পাঠ করান দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক বর্ষীয়ান মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ খান।
অনুষ্ঠানটিতে অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন সাইফুদ্দীন আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; শিরীন হক, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী। জাহিদ হোসাইন, হিউম্যান রাইটস অফিসার,

ইউনাইটেড নেশন বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় করেন ইজাজুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি।