News Details
Press Statement_Mob Lynching in Rangpur
প্রেস বিবৃতি
রংপুর জেলার তারাগঞ্জে ভ্যানচোর সন্দেহে দুই নিরপরাধ মানুষ—রুপলাল দাস (৪০) ও প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক প্রদীপ লাল (৩৫)—কে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনাটি মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য এক গুরুতর হুমকি। এই ঘটনায় নিহতরা হাতজোড় করে প্রাণভিক্ষা চাইলেও উত্তেজিত জনতা কোনো অনুরোধ শোনেনি এবং পুলিশের উপস্থিতিতেও উদ্ধার কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ায় মূল্যবান দুটি প্রাণ হারাতে হলো।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এই মর্মান্তিক ও অমানবিক ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং বলছে—
· কোনো অপরাধের অভিযোগ থাকলেও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনৈতিক।
· পুলিশ জীবিত অবস্থায় ভিকটিমদের দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় দায়িত্বে চরম অবহেলার পরিচয় দিয়েছে।
· জনতার হাতে নিরপরাধ মানুষ নিহত হওয়া একটি ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যর্থতা, যা অবিলম্বে রোধ করা জরুরি।
এইচআরএসএস-এর দাবিসমূহ:
· ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
· গণপিটুনিতে জড়িত সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
· ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
· প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করে জনতার হাতে শাস্তি দেওয়ার প্রবণতা রোধে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় প্রচারণা চালাতে হবে।
· নিহত পরিবারের নিরাপত্তা ও আর্থিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির হিসাব মতে, গত সাত মাসে (জানুয়ারি থেকে জুলাই) মব সহিসতা ও গণপিটুনীর অন্তত ১৭৩ টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৯ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫৮ জন ।
মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএস দৃঢ়ভাবে মনে করে, বিচারহীনতা ও আইন প্রয়োগে অবহেলা থাকলে এমন নৃশংস ঘটনা আবারও ঘটবে। তাই সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নাগরিক সমাজকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।